নাফিস ফুয়াদ শুভ

নানা বাড়ি বেড়াতে যেয়ে গাছের ডালে শুয়ে থাকা একটা বিড়ালের ছবি তুলেছিলেন। বিড়ালটা চুপচাপ বসে, গোল গোল চোখ, বড় বড় করে তাকিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন কেবল তার যাত্রা শুরু হয়েছে। সেই ছবি এনে দেখিয়েছিলেন ফটোগ্রাফিক সোসাইটির বড় ভাইদের। অন্যান্য ছবিগুলোর ভিড়ে বাকিদের কাছে নজর কাড়ে এই ছবিটি। এক বড় ভাই ছবিটির ক্যাপশন দিয়ে দিলেন ‘ম্যাজিস্টিক লুক’। মজার ব্যাপার হল সেই ছবিটিই আইইউটির ইন্ট্রা ইউনিভার্সিটি এক্সিবিশনে জায়গা করে নেয়। সেই থেকে অনুপ্রেরণা আর আত্মবিশ্বাস পাওয়া শুরু ছেলেটির। নাম তার নাফিস ফুয়াদ শুভ।
ছোটবেলায় একটা ফিল্মের ইয়াসিকা ক্যামেরা ছিল নাফিসদের বাসায়। সেটা নিয়েই মাঝে মধ্যে নাড়াচাড়া করতেন। কলেজে যখন ঢুকবেন তখন তার ছিল নোকিয়া এন৭০, তৎকালীন মাত্র ২ মেগাপিক্সেল বিশিষ্ট ক্যামেরা নিয়ে মাঝে মধ্যে টুকটাক ছবি তুলে বন্ধুদের মধ্যে ব্যাপক ভাব মারতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে মা’র কাছে বায়না করেছিলেন একটা ডিজিটাল ক্যামেরার। নিজের জমানো টাকার সাথে মা’র কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে কিনেছিলেন ডিজিটাল ক্যামেরা। সেই ক্যামেরা দিয়েই পরবর্তীতে তোলা হত ছবি। ম্যাজিস্টিক লুক সেই ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়েই তোলা।
আইইউটিতে ঢুকার পর থেকেই ছবির প্রতি ভালবাসা আরও বাড়তে থাকে। ফেসবুক, ফ্লিকারে সবার এত সুন্দর সুন্দর ছবি দেখে সে মুগ্ধ, কিন্তু সামান্য এই ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে তো আর তা তোলা সম্ভব না। এবার একটা ডিএসএলআর ক্যামেরা কিনতে হবে। কাছের বন্ধু ইমরান শাহেদ ততদিনে একটা ক্যামেরা কিনেছে। সেটা দেখে আগ্রহ আরও বেড়ে গেল। বাসায় বলে আর নিজের জমানো বৃত্তির টাকা দিয়ে ২০১২ এর জানুয়ারিতে কিনে ফেলেন শখের ডিএসএলআর। এরপর আর থেমে থাকা নয়। আইইউটি ফটোগ্রাফিক সোসাইটিতে ওঠাবসা ছিলই। সেখান থেকে যোবায়ের শুভর সাথে পরিচিত হয়ে আস্তে ধীরে গড়ে তোলা এই ড্রীম উইভার। এই প্রতিষ্ঠানের সকলের কাছে তিনি এনএফএস ভাই নামেই পরিচিত।
নাফিস ফুয়াদের ছোটবেলা কেটেছে খুলনাতে। ছিলেন খুলনা জিলা স্কুলে। স্কুল জীবন শেষে ঢাকায় এসে উচ্চমাধ্যমিকের পড়াশুনা করেন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে। ২০০৯ সালে উচ্চমাধ্যমিক দেবার পর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পড়াশুনা করেছেন যন্ত্রকৌশল নিয়ে।